ঢাকা, রবিবার   ২৮ এপ্রিল ২০২৪

‘বঙ্গবন্ধু’ থেকে ‘বিশ্ববন্ধু’ হওয়ার ৫০ বছর 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৩৩, ১৩ মে ২০২৩

তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়েছিলেন সেই ১৯৬৯ সালে। ৬ দফা দাবির পক্ষে প্রচারণা চালানোর কারণে গ্রেপ্তারের পর, বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এরপরই ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সংবর্ধনা দেয় বাংলার মানুষ। সেই সংবর্ধনা সভাতেই বঙ্গবন্ধু উপাধি পান শেখ মুজিবুর রহমান। এর প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ১৯৭২ সালের ২৩ মে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জুলিও কুরি শান্তি পদক পান তিনি। এরমধ্যদিয়েই শুধু বাংলার নয় বিশ্বের বন্ধু হিসাবে পরিচিতি পান বাঙালির অবিসংবাদিত এই নেতা।

বিশ্বশান্তি পরিষদের প্রেসিডেনশিয়াল কমিটির সভায় ১৪০টি দেশের প্রায় ২০০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সবাই একমত হয়েছিলেন, সারা জীবনের দর্শন আর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়কত্বের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকে জুলিও কুরি পদক প্রদান করার। সে বিবেচনায় বিশ্বশান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর পদকপ্রাপক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর নাম ঘোষণা করে। আর পরের বছর ২৩ মে এশীয় শান্তি সম্মেলনের এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে সেই পদক বঙ্গবন্ধুকে পরিয়ে দেন পরিষদের তৎকালীন সেক্রেটারি জেনারেল রমে শচন্দ্র। 

বাঙালির দীর্ঘদিনের পরাধীনতার শেকল থেকে মুক্তির জন্য বরাবরই লড়ে গেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। এর ফলশ্রুতিতেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যুগান্তকারী ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে ষ্পষ্ট হয়ে যায় স্বাধীন হতে চলেছে বাঙালি, জন্ম হতে চলেছে বাংলাদেশের।  

এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা এক নারকীয় উপায় বেছে নেয়। আর তা হলো, বাঙালি নিধন। অর্থাৎ অপারেশন সার্চ লাইট, ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা। ঠিক সেই রাতেই গ্রেপ্তার হন বঙ্গবন্ধু। তবে তার আগেই তিনি বাঙালির উদ্দেশ্যে দিয়ে যান তার দিকনির্দেশনা, স্বাধীনতার ঘোষণাবার্তা। 

নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর কাঙ্খিত স্বাধীনতার দেখা পায় এই জাতি। তবে অপূর্ণতা রয়ে যায়, কারণ তখনও জাতির পিতা পাকিস্তানের কারাগারে। 

প্রায় ২৩ দিন অপেক্ষার পর মুক্তি পান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর দেশ গড়ার ব্রত নেন তিনি। 

একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন ও মানবতার জন্য বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জুলিও কুরি শান্তি পদক দেওয়া হয়। এটি মূলত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের লড়াই-সংগ্রামের ফসল। 

১৯৭৩ সারের ২৩ মে ঢাকায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক বিশ্ব শান্তি পরিষদের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদক প্রদান করে, বিশ্ব শান্তি পরিষদের সে সময়ের মহাসচিব শ্রী রমেশ চন্দ্র বলেছিলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।” 

সেই দিন থেকেই বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃতি পান বিশ্ববন্ধু হিসেবে। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রনেতার সেটিই ছিল প্রথম আন্তর্জাতিক পদক লাভ। বঙ্গবন্ধুর এই সম্মান প্রাপ্তির ৫০ বছর পূরণ হতে চলেছে এ বছর। 

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি